সম্পদ হচ্ছে আমাদের সকল চাহিদা পূরণের হাতিয়ার। গৃহ ব্যবস্থাপনার সংজ্ঞা থেকে আমরা জেনেছি যে,
পরিবারের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্পদের সঠিক ব্যবহার একান্ত প্রয়োজন। লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আমাদের
নানাবিধ কাজ করতে হয়। প্রতিটি কাজ করতে আমাদের কোনো না কোনো সম্পদ ব্যবহারের প্রয়োজন হয়।
সম্পদ বলতে আমরা সাধারণত বুঝি অর্থ, জমিজমা, বাড়িঘর, গহনা ইত্যাদি। কিন্তু এসবের বাইরেও
আমাদের আরও অনেক সম্পদ আছে। যেমন- শক্তি, দক্ষতা, জ্ঞান, বুদ্ধি, মনোভাব ইত্যাদি। এগুলো যে
সম্পদ সে সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই কোনো ধারণা নাই। অথচ মানুষের এই গুণগুলো তার সম্পদের
ভাণ্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করে। উল্লিখিত দুই ধরনের সম্পদই আমাদের গৃহ সম্পদ হিসাবে পরিচিত।
গৃহ ব্যবস্থাপনায় গৃহ সম্পদের ব্যবহার অপরিহার্য। গৃহ সম্পদ ছাড়া পরিবারের কোনো সিদ্ধান্তই কার্যকর করা
সম্ভব নয়। কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য এই গৃহ সম্পদসমূহ সুষ্ঠু পরিকল্পনা, সংগঠন, নিয়ন্ত্রণ ও
মূল্যায়নের মাধ্যমে ব্যবহৃত হয়।
সকল সম্পদের কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন-
সম্পদের উপযোগ : উপযোগ হচ্ছে দ্রব্যের সেই গুণ যা দ্বারা মানুষের চাহিদা পূরণ সম্ভব হয়। সকল
সম্পদেরই কম-বেশি উপযোগিতা রয়েছে। অর্থাৎ সকল সম্পদের প্রয়োজন মেটানোর ক্ষমতা আছে।
তবে সম্পদভেদে এর তারতম্য দেখা যায়। টেবিল, চেয়ার ব্যবহার করে আমরা পড়া-লেখা করি, তাই
এগুলো সম্পদ।
সম্পদের সীমাবদ্ধতা সম্পদের আরেকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো সকল সম্পদই সীমিত।
যেমন-একজন ব্যক্তির সারা দিন-রাত্রি মিলিয়ে চব্বিশ ঘণ্টা সময়, যা একেবারেই সীমিত। আবার
একটা পরিবারের সীমিত আয় বা সীমিত জায়গা ইত্যাদি সম্পদের সীমাবদ্ধতা নির্দেশ করে।
সম্পদের ব্যবহার পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ও নির্ভরশীল : যে কোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য একক কোনো
সম্পদের ব্যবহার না করে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্নরকম সম্পদ একত্রে প্রয়োগ করা হয়। যে
কোনো কাজ করতে গেলে অর্থ, সময়, শক্তি, দক্ষতা ইত্যাদি একাধিক সম্পদের প্রয়োজন হয়।
পরস্পর সম্পর্কযুক্ত সম্পদের যৌথ ব্যবহারে লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়।
সকল সম্পদই ক্ষমতাধীন সম্পদকে ব্যক্তির মালিকানাধীনে বা আয়ত্বে থাকতে হবে। যদি কোনো
1
দ্রব্য নিজের ক্ষমতাধীনে না থাকে বা একে যদি কোনো অধিকার দ্বারা কাজে লাগানো না যায়, তবে
তা সম্পদ নয়।
সম্পদ হচ্ছে আমাদের সকল চাহিদা পূরণের হাতিয়ার। গৃহ ব্যবস্থাপনার সংজ্ঞা থেকে আমরা জেনেছি যে, পরিবারের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্পদের সঠিক ব্যবহার একান্ত প্রয়োজন। লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আমাদের নানাবিধ কাজ করতে হয়। প্রতিটি কাজ করতে আমাদের কোনো না কোনো সম্পদ ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। সম্পদ বলতে আমরা সাধারণত বুঝি অর্থ, জমিজমা, বাড়িঘর, গহনা ইত্যাদি। কিন্তু এসবের বাইরেও আমাদের আরও অনেক সম্পদ আছে। যেমন- শক্তি, দক্ষতা, জ্ঞান, বুদ্ধি, মনোভাব ইত্যাদি। এগুলো যে সম্পদ সে সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই কোনো ধারণা নাই। অথচ মানুষের এই গুণগুলো তার সম্পদের ভাণ্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করে। উল্লিখিত দুই ধরনের সম্পদই আমাদের গৃহ সম্পদ হিসাবে পরিচিত।
গৃহ ব্যবস্থাপনায় গৃহ সম্পদের ব্যবহার অপরিহার্য। গৃহ সম্পদ ছাড়া পরিবারের কোনো সিদ্ধান্তই কার্যকর করা সম্ভব নয়। কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য এই গৃহ সম্পদসমূহ সুষ্ঠু পরিকল্পনা, সংগঠন, নিয়ন্ত্রণ ও মূল্যায়নের মাধ্যমে ব্যবহৃত হয়।
সকল সম্পদের কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন-
সম্পদের উপযোগ : উপযোগ হচ্ছে দ্রব্যের সেই গুণ যা দ্বারা মানুষের চাহিদা পূরণ সম্ভব হয়। সকল সম্পদেরই কম-বেশি উপযোগিতা রয়েছে। অর্থাৎ সকল সম্পদের প্রয়োজন মেটানোর ক্ষমতা আছে। তবে সম্পদভেদে এর তারতম্য দেখা যায়। টেবিল, চেয়ার ব্যবহার করে আমরা পড়া-লেখা করি, তাই এগুলো সম্পদ।
সম্পদের সীমাবদ্ধতা সম্পদের আরেকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো সকল সম্পদই সীমিত। যেমন-একজন ব্যক্তির সারা দিন-রাত্রি মিলিয়ে চব্বিশ ঘণ্টা সময়, যা একেবারেই সীমিত। আবার একটা পরিবারের সীমিত আয় বা সীমিত জায়গা ইত্যাদি সম্পদের সীমাবদ্ধতা নির্দেশ করে।
সম্পদের ব্যবহার পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ও নির্ভরশীল : যে কোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য একক কোনো সম্পদের ব্যবহার না করে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্নরকম সম্পদ একত্রে প্রয়োগ করা হয়। যে কোনো কাজ করতে গেলে অর্থ, সময়, শক্তি, দক্ষতা ইত্যাদি একাধিক সম্পদের প্রয়োজন হয়। পরস্পর সম্পর্কযুক্ত সম্পদের যৌথ ব্যবহারে লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়।
সকল সম্পদই ক্ষমতাধীন সম্পদকে ব্যক্তির মালিকানাধীনে বা আয়ত্বে থাকতে হবে। যদি কোনো 1 দ্রব্য নিজের ক্ষমতাধীনে না থাকে বা একে যদি কোনো অধিকার দ্বারা কাজে লাগানো না যায়, তবে তা সম্পদ নয়।
গৃহ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার
কোনো কোনো সম্পদ হস্তান্তর করা যায়। যেমন-বাড়িঘর, অর্থ, জমিজমা, বাড়ির যাবতীয় আসবাবপত্র, সরঞ্জাম
ইত্যাদি। কিন্তু বুদ্ধিমত্তা, শক্তি, সামর্থ্য, দক্ষতা, সময় ইত্যাদি সম্পদগুলো কখনো হস্তান্তর করা যায় না। কারণ
এগুলো মানুষের নিজস্ব অন্তর্নিহিত গুণাবলি। সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও কিছু কিছু সম্পদ চর্চা বা
অনুশীলনের দ্বারা বৃদ্ধি করা যায়। যেমন- জ্ঞান, দক্ষতা, শক্তি ইত্যাদি। আয় বাড়ানোর বিভিন্ন উপায় অবলম্বন
করে পরিবারের অর্থ সম্পদও বাড়ানো যায়।
গৃহ সম্পদের শ্রেণিবিভাগ
প্রত্যেক মানুষই কম-বেশি বিভিন্ন রকম সম্পদের অধিকারী। যেহেতু সম্পদ ছাড়া কোনো লক্ষ্য অর্জন সম্ভব
না, তাই প্রত্যেক মানুষ তার কিছু কিছু সম্পদের অধিকার এবং তা বৃদ্ধির ব্যাপারে সচেতন। যেমন-অর্থ,
জমিজমা ইত্যাদি। কিন্তু সম্পনের ধরন, পরিমাণ ইত্যাদি সম্পর্কে অনেকের সঠিক ধারণার অভাব রয়েছে।
ফলে অচেনা, অজানা সম্পদগুলো ব্যবহার করতে না পারায় অনেকে লক্ষ্য অর্জন করতে পারে না। গৃহ
ব্যবস্থাপনায় আমরা যা কিছু লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যবহার করি তাই সম্পদ হিসাবে পরিচিত। গৃহ সম্পদের
শ্রেণিবিভাগের মাধ্যমে আমরা সবরকম সম্পদ সম্বন্ধে জানতে পারি এবং লক্ষ্য অর্জনে সেগুলোর সঠিক
ব্যবহার করতে পারি। গৃহ সম্পদকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
মানবীয় সম্পদ
যে কোনো পরিবারে একাধিক সদস্য বাস করে। লক্ষ করলে দেখা যাবে, তারা অনেকে অনেকরকম গুণের
অধিকারী। তাদের জ্ঞান, দক্ষতা, বুদ্ধি, শক্তি, অগ্রহ, মনোভাব ইত্যাদি গুণগুলো মানবীয় সম্পদ হিসাবে
চিহ্নিত। এ সম্পদগুলোকে কস্তুগত সম্পদের মতো দেখা বা পরিমাপ করা যায় না। অথচ এগুলোর ব্যবহার
দ্বারা অনেক লক্ষ্য অর্জন করা যায়। মানবীয় সম্পদগুলোকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে আমরা নিজেদের ও
পরিবারের অনেক উন্নয়ন ঘটাতে পারি।
অমানবীয় বা বস্তুগত সম্পদ
আমাদের বাড়ি-ঘর, জমি-জমা, অর্থ, গৃহের যাবতীয় সরঞ্জাম, আসবাবপত্র, গয়না, সামাজিক সুবিধাদি সবই
বস্তুগত সম্পদ। এ সম্পদগুলো দেখা যায়, পরিমাপ করা যায়। এ সম্পদগুলোর দ্বারা আমরা অনেক চাহিদা
পূরণ করি। কস্তুগত সম্পদের মধ্যে অর্থ অর্থাৎ টাকা-পয়সা সবচেয়ে মূল্যবান এবং কার্যকর সম্পদ। কারণ
অর্থের বিনিময়ে আমরা অন্য বস্তুগত সম্পদগুলো সংগ্রহ করি।
গার্হস্থ্য বিজ্ঞান
পরিবারের লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য মানবীয় ও বস্তুগত উভয় সম্পদই সম্মিলিতভাবে ব্যবহার করা হয়। সব
সম্পদই যেহেতু মূল্যবান, তাই এগুলোর ব্যবহারে আমাদের সচেতন হতে হবে। সম্পদের সদ্ব্যবহার দ্বারা
আমরা অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি। পরিকল্পনার মাধ্যমে সীমিত সম্পদ ব্যবহার করেও আমরা সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি
লাভ করতে পারি।
লক্ষ্যকে সামনে রেখে যে কোনো কাজ করতে গেলে আমাদের একই সাথে সময় ও শক্তি দুটি সম্পদ ব্যবহার
করতে হয়। তাই আমরা এখন একসঙ্গে দুটি সম্পদের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করব।
সময় পরিকল্পনা
মানুষের জীবনে সময় এমনই এক সম্পদ, যা সবার জন্য সমান এবং একেবারেই সীমিত। এই সীমিত
সম্পদের মধ্যে যে ব্যক্তি যত বেশি অর্থবহ কাজ দিয়ে নিজেকে সময়ের সাথে সম্পৃক্ত করতে পারবে, জীবনে
সে তত বেশি সফলকাম হবে। সময়কে যথাযথভাবে ব্যবহার করে মানুষ ব্যক্তিগত, অর্থনৈতিক ও
সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। প্রতিদিন আমাদের জন্য চব্বিশ ঘণ্টা সময় বরাদ্দ রয়েছে।
কোনো অবস্থাতেই একে বাড়ানো সম্ভব নয় অথচ চাহিদা অনুযায়ী আমাদের অনেক কাজ করার থাকে। সে
কারণেই সময়ের সদ্ব্যবহারের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হবে কম সময় ব্যয় করে বেশি
কাজ করা এবং সময়ের অপচয় না করা। আর সেজন্যই আমাদের সময়ের পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। একদিনে
আমরা কী কী কাজ করব, কখন করব, নির্দিষ্ট কাজে কতটুকু সময় ব্যয় করব ইত্যাদির সমন্বয়ে একটি
লিখিত পরিকল্পনা বা সময় তালিকা প্রণয়ন করা হয়।
সময়-তালিকার প্রয়োজনীয়তা
করণীয় কাজ সম্পর্কে ধারণা হয়। কোন কাজগুলো বেশি এবং কোনগুলো কম প্রয়োজনীয় সে
সম্বন্ধে সঠিক ধারণা লাভ করা যায়।
সময়মতো কাজ করার অভ্যাস গড়ে উঠে। কাজের সময় নির্ধারিত থাকে বলেই সময়ের কাজ
সময়ে করার অভ্যাস গড়ে উঠে।
প্রতিটা কাজে কতটুকু সময় ব্যয় হয়, তার ধারণা জন্যে।
কাজের দক্ষতা ও গতিশীলতা বাড়ে। সময় তালিকা অনুসরণ করলে সময়মতো কাজ শেষ হয়ে
যায়। বাড়তি সময়ে বিভিন্নরকম সৃজনশীল কাজের সুযোগ পাওয়া যায়।
• বিশ্রাম, অবসর ও বিনোদন করা সম্ভব হয়। কারণ সময় তালিকায় কাজ, বিশ্রাম ও অবসর
বিনোদনের ব্যবস্থা থাকে।
গৃহ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার
ছোটবেলা থেকেই আমাদের সবারই সময়ের প্রতি যত্নবান হওয়া দরকার। সময়মতো সব কাজ করলে কাজ
জমে যায় না। ফলে প্রয়োজনীয় কাজগুলো সহজেই সম্পন্ন করা যায়। যেমন- ছাত্রছাত্রীরা যদি প্রতিদিনের
পড়ালেখা সময়মতো সম্পন্ন করে, তাহলে সে খুব সহজেই কৃতকার্য হতে পারবে। আর যে সময়মতো
পড়ালেখা করে না, পরীক্ষার সময় পড়া তার কাছে বোঝা মনে হবে। সময়মতো পড়ালেখা না করার জন্য
তখন এই সমস্যা তৈরি হবে। তাইতো একটা প্রচলিত বচন আছে যে, "সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ
সময় তালিকা প্রণয়নে বিবেচ্য বিষয়
সময় তালিকা করার সময় কিছু বিষয় বিবেচনায় আনতে হয়। যেমন-
• দৈনিক করণীয় কাজগুলো নির্ধারণ করতে হবে।
গুরুত্ব অনুসারে কাজের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
যৌথভাবে কাজ করতে হলে, অন্যের সুবিধা-অসুবিধার দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
সময় তালিকায় কাজের সময়, বিশ্রাম, ঘুম ও অবসর সময় রাখতে হবে।
একটা কঠিন বা ভারী কাজের পর হালকা কাজ বা বিশ্রাম দিতে হবে।
সময়-তালিকা নমনীয় হতে হবে, যাতে প্রয়োজনে রদবদল করা যায়।
শক্তি পরিকল্পনা
অর্থ ও সময়ের মতো শক্তিও পরিবারের একটি অন্যতম সম্পদ। মানবীয় এ সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের ফলে
পরিবারের অনেক লক্ষ্য অর্জিত হয়। ব্যক্তিবিশেষে শক্তির তারতম্য ঘটে। শক্তির সদ্ব্যবহারের দিকে সকলের
যত্নবান হওয়া উচিত। কোনো একটি কাজ এমনভাবে করতে হবে, যাতে সে কাজে কম শক্তি ব্যবহার হয়।
তাহলেই আমাদের সীমিত শক্তি দিয়েও অনেক কাজ করতে পারব। শক্তিকে ইচ্ছামতো ব্যবহার করলে, তা
তাড়াতাড়ি ক্ষয় হয়ে যায়। ফলে কাজে অনীহা, ক্লান্তি ও বিরক্তির সৃষ্টি হয়। তাই শক্তির সদ্ব্যবহারের জন্য
পরিকল্পনা প্রয়োজন। এর ফলে শক্তির অপচয় রোধ করা যায়। শক্তির যথাযথ ব্যবহারের জন্য যে পরিকল্পনা
করা হয়, সেখানে কিছু বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে-
সারাদিনের একটা কর্ম-তালিকা করতে হবে। যেখানে প্রয়োজনীয় কাজগুলো সময় অনুযায়ী সাজানো
থাকবে।
কাজ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। কোন কাজে কেমন শক্তি লাগে, কীভাবে সহজে কাজটা
করা যায় সে দিকে নজর দিতে হবে।
ব্যক্তিগত পছন্দ অনুযায়ী কাজ ভাগ করে দিলে আগ্রহ ও আনন্দের সঙ্গে কাজটা সমাপ্ত করা
যায়।
গার্হস্থ্য বিজ্ঞান
-বয়স অনুযায়ী কাজ ভাগ করতে হবে। সব বয়সে কাজ করার সামর্থ্য একরকম না, সেটা
বিবেচনায় রাখতে হবে।
-একই সময়ে কেবল একটি কাজ হাতে নিতে হবে।
কাজটি শেষ হবার পর যে মানসিক তৃপ্তি আসে, তা
কাজের স্পৃহা বাড়িয়ে দেয়।
-কাজের সময় দুই হাতই ব্যবহার করতে হয়।
তাছাড়া সঠিক দেহভঙ্গি বজায় রেখে কাজ করতে
হয়। যেমন- ঘর বসে না মুছে দাঁড়িয়ে মুছলে শক্তি
কম খরচ হয়।
-ভারী কাজের পর বিশ্রাম বা হালকা কাজ রাখতে
হয়।
-কাজ সহজকরণ এবং শ্রমলাঘরের বিভিন্ন উপায়।
অবলম্বন করে শক্তির সদ্ব্যবহার করা যায়।
কাজ সহজকরণ ও শ্রমলাঘবের বিভিন্ন উপায় হলো-.
-সময় পরিকল্পনা করা প্রতিদিনের কাজের একটা তালিকা থাকবে, যা অনুসরণ করে অনায়াসে
কাজগুলো করা যায়।
-বাড়ির সঠিক নকশা করা রান্নাঘরের পাশে খাবার ঘর থাকলে, হাঁটাচলায় শক্তি কম খরচ হবে।
-শ্রম বিভাজন করা পরিবারে কাজগুলো বয়স, দক্ষতা, পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন সদস্যদের মধ্যে
ভাগ করে দিলে, একজনের উপর সব কাজের চাপ পড়ে না।
-কাজের উপযুক্ত স্থানে সরঞ্জামাদি সঠিকভাবে রাখা - প্রত্যেকটি কাজ তার নির্ধারিত স্থানে করলে
শক্তির অপচয় হয় না। একটা কাজের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো সঠিক স্থানে রাখলে সহজে, কম শ্রমে
কাজ করা যায়।
বিভিন্ন শ্রমলাঘব সাজসরঞ্জামের ব্যবহার- গৃহে ওয়াশিং মেশিন, প্রেসার কুকার, রাইস কুকার, মাইক্রো ওয়েভ ওভেন, বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি ইত্যাদি ব্যবহার করলে সময় ও শক্তির সাশ্রয় হয়।
অর্থ পরিবারের একটি অন্যতম ও প্রধান কস্তুগত সম্পদ। প্রতিটি পরিবারে কম-বেশি অর্থ বা টাকা-পয়সা আছে। অন্যান্য সম্পদের মতো অর্থ সম্পদও অত্যন্ত সীমিত। এই সীমিত অর্থ দ্বারাই পরিবারের সব ব্যয়ভার মেটানো হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন উপায়ে এই অর্থ উপার্জন করে থাকে। আমাদের চাহিদা অনেক, কিন্তু সেই তুলনায় অর্থ খুবই সীমিত। সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে অর্থ ব্যয় করতে পারলে আমাদের চাহিদাগুলো পূরণ হওয়া সম্ভব এবং অর্থের অপচয় হয় না।
অর্থ পরিকল্পনা করতে হলে পরিবারের মোট আয়ের পরিমাণ এবং ব্যয় সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। পরিকল্পনা না থাকলে অতি প্রয়োজনীয় চাহিদাগুলো পূরণ নাও হতে পারে। পরিবারের লক্ষ্যসমূহের প্রতি দৃষ্টি রেখে এমনভাবে অর্থ ব্যয় করতে হবে, যাতে তুলনামূলকভাবে অধিক প্রয়োজনগুলো আগে পূরণ করা যায়।
অর্থ পরিকল্পনার প্রধান কৌশল হলো বাজেট। পরিবারের লক্ষ্যসমূহ অর্জন করার জন্য সীমিত অর্থের ভবিষ্যৎ খরচের পরিকল্পনাই হচ্ছে বাজেট। সহজ করে বলা যায়, বাজেট হচ্ছে অর্থ ব্যয়ের পূর্ব পরিকল্পনা।
বাজেট করার প্রয়োজনীয়তা-
-বাজেট করলে পরিবারের আয়-ব্যয় সম্বন্ধে সঠিক ধারণা হয়।
-আয় ও ব্যয়ের মধ্যে সমতা রক্ষা করা যায়।
-বাজেটে সঞ্চয়ের খাত থাকাতে, পরিবার সঞ্চয় করতে পারে।
-বাজেটের সাহায্যে পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ চাহিদাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পূরণ করা সম্ভব।
-বাজেট অর্থের অপচয় রোধ করে, সচ্ছলতা আনতে সাহায্য করে।
পারিবারিক বাজেট তৈরির নিয়ম
পরিবারের আয়ের ভারতম্যের জন্য বাজেট বিভিন্নরকম হতে পারে। যেমন- দৈনিক বাজেট, মাসিক বাজেট ইত্যাদি। অর্থ পরিকল্পনা করতে হলে মূল তিনটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে-
প্রথমত: উদ্দেশ্য বা লক্ষ্যের ভিত্তিতে আমাদের চাহিদা তৈরি হয়। তাই অর্থ পরিকল্পনার সময় আগে লক্ষ্য
স্থির করে নিতে হয়।
দ্বিতীয়ত: পরিবারের উপার্জনকারী ব্যক্তিদের অর্জিত মোট আয় নিরূপণ করতে হবে। বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত অর্থগুলোকে এক সাথে যোগ করে পরিবারের আয়কৃত অর্থ সম্বন্ধে পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে।
তৃতীয়ত: পরিবারের ব্যয়ের বিভিন্ন খাতগুলো নির্ধারণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে খাতগুলো সাজাতে হবে। যেমন- খাদ্য, বত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা, সঞ্চয়, চিত্তবিনোদন ইত্যাদি ব্যয়ের খাতগুলো ঠিক করে, কোন খাতে কত অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে, তা স্থির করতে হবে। প্রত্যেক খাতের কিছু উপখাতও আছে। খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ সেই উপখাতগুলোতেও বরাদ্দ দিতে হবে।
পরিবারের সকল সদস্যের প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনায় এনে অর্থ পরিকল্পনা করতে হবে। অন্যান্য পরিকল্পনার মতো অর্থ পরিকল্পনার সময় পরিবারের সকল সদস্যের উপস্থিতি ও তাদের মতামত বা পছন্দ অপছন্দের গুরুত্ব দিতে হবে। পরিকল্পনার মাধ্যমে অর্থ ব্যয় করলে পরিবারে অর্থ সংকট দেখা দেবে না এবং যে কোনো পরিস্থিতি সহজেই মোকাবেলা করতে পারবে।
অর্থ ব্যয়ের তালিকা তৈরি করার সময় বিভিন্ন দ্রব্যের বাজারদরের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে। কোনো অবস্থাতেই প্রাপ্ত অর্থের চেয়ে বেশি ব্যয়ের পরিকল্পনা করা যাবে না। দরকার হলে কম প্রয়োজনীয় চাহিদাগুলো বাদ দিতে। হতে পারে।
বাজেট তৈরি হয়ে গেলে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। বাস্তবায়ন করতে না পারলে পরিকল্পনা কোনো কাজে আসবে না। বাজেট বাস্তবায়নের দ্বারা অর্থ ব্যয়ের সদভ্যাস গড়ে উঠতে পারে।
অবশেষে মূল্যায়ন করে দেখতে হবে, বাজেটটি কতটুকু ফলপ্রসু হলো। পরিকল্পনাটি সফল না হলে, তার কারণ খুঁজে সংশোধনের মাধ্যমে পরবর্তীতে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়। বাজেটটি যেন সুষম হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। আয় ও ব্যয়ের অর্থ সমানভাবে মিলে গেলে, তাকে সুষম
বাজেট বলে। যেমন- কোনো পরিবারের আর যদি মাসে বিশ হাজার টাকা হয় এবং বাজেটের খাতগুলোতে যদি ঐ টাকায় সংকুলান হয়ে যায় তাহলে সেটা সুষম বাজেট। আর বায় যদি আয়ের চেয়ে বেশি হয়, , সেটা হবে ঘাটতি বাজেট ঘাটতি বাজেট আমাদের কখনোই কাম্য নয়। এরকম বাজেটে পরিবারে প্রতিমাসে 1 ঋণের বোঝা বাড়ে।
সবচেয়ে ভালো হচ্ছে উদ্বৃত্ত বাজেট। এই বাজেটে পরিবারের সব খরচ মেটাবার পরও কিছু অর্থ উদ্বৃত্ত থেকে যায়। এই উদ্বৃত্ত অর্থ দিয়ে আরও চাহিদা পূরণ করা যায়। আবার তা সঞ্চয় করে রাখলে ভবিষ্যতে কাজে লাগে।
আমাদের প্রতিটি গৃহে এমন কতকগুলো নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র থাকে, যা পরিবারের যৌথ সম্পদ হিসাবে বিবেচিত হয়। পরিবারের সব সদস্য যৌথভাবে সে সম্পদগুলো ব্যবহার করে থাকে। যেমন- বাতি, বৈদ্যুতিক পাখা, খবরের কাগজ, টেলিফোন, টয়লেট, কলতলা, কুয়ার পানি, আঙিনা ইত্যাদি। যৌথ সম্পদগুলোর ব্যবহারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। কারণ ব্যবহারে সামান্য অসতর্কতা বা অবহেলার ফলে সদস্যদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি ও সম্পর্কের অবনতি হতে পারে।
পারিবারিক যৌথ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের লক্ষ্যে সদস্যদের ব্যক্তিগত স্বার্থত্যাগের জন্য মানসিক প্রস্তুতি
থাকতে হবে। সমঝোতা ও সহনশীলতার মাধ্যমে যৌথ সম্পদগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করে, পরিবারের
সকলের মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখা যায়।
বাতি-কাজের সুবিধার জন্য আমরা গৃহের প্রতিটি কক্ষে আলো ব্যবহার করে থাকি। কাজ অনুযায়ী বাতির
তীব্রতা কম-বেশি হয়ে থাকে। এক কক্ষে দুই-তিনজন সদস্য থাকলে প্রত্যেকের বিভিন্নরকম কাজ থাকতে পারে।
কিন্তু সবার জন্য পৃথক আলোর ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। যেমন- সাধারণত শোবার ঘর আমরা পড়া ও ঘুমের জন্য
ব্যবহার করি। একই ঘরে একজন যদি তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ে, তবে আরেকজন টেবিলল্যাম্প ব্যবহার করে পড়তে
পারে। তাহলে প্রত্যেকের জন্য সুবিধাজনক পরিবেশ তৈরি হবে। যেসব কাজ একই আলোতে করা যায়, তার
জন্য আলাদা আলোর ব্যবহার করলে অর্থের অপচয় হয়। কাজ শেষে বাতি নিভিয়ে ফেলার অভ্যাস প্রত্যেক
সদস্যের থাকতে হবে, যাতে এ সম্পদের অপচয় না হয়।
বৈদ্যুতিক পাখা- একটি কক্ষে একাধিক সদস্য থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে কক্ষের একটি পাখায় সব সদস্যের
প্রয়োজনীয় বাতাসের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। প্রত্যেকের সুবিধা-অসুবিধা ও প্রয়োজন বুঝে এ পাখা ব্যবহার
করতে হবে। যার বেশি বাতাসের প্রয়োজন, সে পাখার সোজাসুজি নিচে থাকবে। আর যার কম বাতাসের
প্রয়োজন, সে পাখা থেকে দূরে থাকতে পারে। অসুস্থ কোনো সদস্যের পাখার বেশি বাতাসে ক্ষতি হলে,
আস্তে পাখা চালাতে হবে। অর্থাৎ পরিস্থিতি বুঝে সমঝোতার সাথে পাখা ব্যবহার করতে হবে।
খবরের কাগজ- খবরের কাগজের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের খবর পাওয়া যায়। খবরের কাগজ সবাইকে পড়ার
সুযোগ দিতে হবে। বাড়িতে বড়রা প্রথমে খবরের কাগজ পড়ে থাকেন। বিশেষ করে যারা অফিসে বা বাইরে
যাবেন, তাদের আগে পড়ার সুযোগ দিতে হয়। এরপর ছোটরা সমবেতভাবে বা পর্যায়ক্রমে পড়তে পারে।
অনেক সময় দেখা যায় খবরের কাগজে কোনো উত্তেজনাপূর্ণ খবর বের হয়েছে, যা জানার জন্য সবাই উদ্গ্রীব
থাকে। সে ক্ষেত্রে একজন জোরে পড়লে, অনারাও শুনতে পারে। এতে সবাই মিলিতভাবে আনন্দ পেতে
পারে। আবার নিজেদের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে বিভিন্ন পৃষ্ঠা ভাগ ও অদলবদল করে কয়েকজন একই
সময়ে পড়তে পারে। পড়া শেষে সব পৃষ্ঠা পর পর সাজিয়ে ভাজ করে নির্দিষ্ট স্থানে তারিখ অনুসারে সাজিয়ে
রাখতে হয়।
টেলিফোন- যোগাযোগের অন্যতম সহজ মাধ্যম হচ্ছে টেলিফোন। টেলিফোন ব্যবহারের সময় মনে রাখতে
হবে যে, অকারণে অতিরিক্ত কথা বলে যেন সেটটি আটকে না রাখা হয়। একজন অনেকক্ষণ কথা বললে,
অন্যের জরুরি যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটতে পারে। প্রয়োজনীয় খবরের আদান-প্রদান হয়ে গেলেই,
রিসিভারটি সঠিকভাবে টেলিফোন সেটের উপর নামিয়ে রাখতে হয়। প্রত্যেকের মনে রাখতে হবে যে,
টেলিফোন শুধুমাত্র প্রয়োজনে ব্যবহার করতে হয়।
টয়লেট/গোসলখানা- প্রত্যেক গৃহে এক বা একাধিক টয়লেট থাকতে পারে। তবে সাধারণত দেখা যায়,
টয়লেটের সংখ্যার তুলনায় পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি থাকে। তাই টয়লেট ব্যবহারের ক্ষেত্রেও আমাদের
প্রয়োজন বুঝে, আগে-পরে ব্যবহার করতে হবে। যার ভোরে অফিসে বা স্কুল-কলেজে যেতে হয়, তাকে টয়লেট
ব্যবহারে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় যেন কেউ টয়লেট আটকিয়ে না রাখে, সেদিকে বিশেষ লক্ষ রাখতে হবে। নিয়মিত
টয়লেটের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। টয়লেটের মেঝে সব সময় শুকনা
রাখতে হবে, যাতে পিচ্ছিল না হয়ে যায়। নিয়মিত পরিষ্কারক ও জীবাণুনাশক দ্রব্য ব্যবহার করে টয়লেট
জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
কলতলা- একটি কল বাড়ির বিভিন্ন সদস্যের বিভিন্ন কাজের জন্য ব্যবহার করতে হয়। যেমন- তৈজসপত্র,
কাপড়, শাকসবজি ইত্যাদি ধোয়া এবং রান্নার জন্য পানি নেওয়া ইত্যাদি। এমন ক্ষেত্রে সবাইকে সমঝোতার
মাধ্যমে কাজ করতে হবে। কলের ঠিক নিচে বসে কাজ না করে, প্রত্যেকে পানি নিয়ে আলাদা আলাদা
জায়গায় কাজ করলে কাজের সুবিধা হয়। অযথা কল ছেড়ে না রেখে কাজ শেষ করে ভালোভাবে কল বন্ধ
করতে হবে যাতে পানির অপচয় না হয়। কাজের সুবিধার জন্য কলতলা সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে।
কুয়ার পানি- গ্রামাঞ্চলে জায়গা বিশেষে কুয়া দেখা যায়। কুয়া থেকে সবাই যেন পানি নিতে পারে, সে সুবিধা
থাকতে হবে। অকারণে বালতি আটকে রেখে অন্যের বিরক্তির উদ্রেক করা ঠিক নয়। পানি তোলা শেষ হলে
বালতি নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে কুয়া ঢেকে রাখতে হবে। কুয়ার চারদিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব
সকলের।
আঙিনা- বাড়িতে আস্তিনা থাকলে, অনেকে বিকালে এখানে এসে গল্প করে, বাগান করে। আঙিনা যেন
পরিষ্কার থাকে সে বিষয়ে বাড়ির সকলকেই যত্নবান হতে হয়। গাছের ঝরাপাতা, আগাছা, ঝোপঝাড় পরিষ্কার
করতে হবে। গৃহের ভিতরের মতো এর আভিনা পরিষ্কার রাখলে সবার শরীর ও মন ভালো থাকবে।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
১. কোনটি মানবীয় সম্পদ ?
খ. পার্ক
ক. অর্থ
ঘ. গয়না
২. শক্তির অপচয় রোধ করা যায়-
1. স্বাধীনভাবে কাজ করলে
ii. সরঞ্জাম হাতের নাগালে রাখলে
450
iii. একই ধরনের কাজ পাশাপাশি করলে
গার্হস্থ্য বিজ্ঞান
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও॥
গ. ii ও iii
ঘ.i, iiiii
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও
৮ম শ্রেণির ছাত্রী সুমিতা লেখাপড়ার পাশাপাশি পরিবারকে সাহায্য করার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন
ধরনের হাতের কাজ শেখে। নিজের তৈরি বিভিন্ন নকশা সামগ্রী ব্যবহার করে ঘরকে সাজায়।
৩. সুমিতার মাঝে কোন ধরনের সম্পদের প্রভাব দেখা যায়?
ক. অর্থ
খ. গৃহের সরঞ্জাম
গ. সদিচ্ছা
ঘ. প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান
৪. উক্ত সম্পদ ব্যবহারে পরিবারের কোন ধরনের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব-
1. আর্থিক
i. সামাজিক
iii. শিক্ষামূলক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
গ. iis lil
খ. i ও iii
ঘ. i, iiiii
সৃজনশীল প্রশ্ন
১. রাশেদা ও সোনিয়া দুই বান্ধবী। দু'জনই গৃহের সদস্যদের চাহিদা পূরণে সচেতন। রাশেদা আয় অনুযায়ী
পরিবারের সদস্যদের চাহিদা মেটানোর জন্য পরিকল্পনা তৈরি করেন। পরিবারের আর্থিক কোনো সমস্যায়
রাশেদাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় না। অন্যদিকে সোনিয়াকে সদস্যদের চাহিদা মেটাতে
হিমশিম খেতে হয়। প্রায়ই মাসের শেষের দিকে তাকে পরিচিত একটি দোকান থেকে বাকিতে চাল
কিনতে হয়। হঠাৎ ২/৩ দিন আগে সোনিয়ার ছোট ছেলে অপু অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য রাশেদার কাছ
থেকে টাকা নিয়ে তিনি ছেলের চিকিৎসা করেন।
ক. কোন সম্পদ ছাড়া পরিবারের কোনো সিদ্ধান্তই কার্যকর করা সম্ভব নয়?
খ. মানবীয় সম্পদ কাকে বলে? বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকে সোনিয়ার এই পরিস্থিতির কারণ কী? ব্যাখ্যা কর।
মেঘ পরিবারের সদস্যদের চাহিদা পূরণে রাশেদা ও সোনিয়ার পরিকল্পনার তুলনামূলক আলোচনা কর।
২. শুভ ও নেলী দুই ভাইবোন। শুভ তার শোবার ঘরে বসে পড়ছে। আর নেলী বসার ঘরে বসে পড়াশোনা
করছে। বিষয়টি দেখে মা নেলীকে শুভর ঘরে পড়ার ব্যবস্থা করে দেন। বড় ঘরটিতে একটি মাত্র ফ্যান
থাকায় নেলী বাতাস পাচ্ছিল না। ফলে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই নেলী ঘেমে উঠে। শুভ বিষয়টি দেখে বোন
নেলীকে ফ্যানের বাতাস পাওয়া যায় এমন জায়গায় গিয়ে বসতে বলে।
ক. গৃহ সম্পদকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
. “শক্তির" যথাযথ ব্যবহার বলতে কী বোঝায়?
গ. শুভ ও নেলীকে একই ঘরে পড়তে দেওয়ার মাধ্যমে মা তার পরিবারের কোন সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার
নিশ্চিত করলেন- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. যৌথ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার শুভ ও নেলীর মধ্যে স্বার্থত্যাগের মানসিকতা গড়ে তুলতে সহায়ক-তুমি
কি এ বিষয়ে একমত? স্বপক্ষে যুক্তি দাও।
যৌথ পরিবারের মেয়ে রুমা স্কুল থেকে ফিরে পানি খেতে যায়। ঘরে পানি না পেয়ে সে কলতলায় পানি আনতে যেয়ে পা পিছলে পড়ে প্রচণ্ড ব্যথা পায় ।
গৃহ পরিবেশে নিরাপত্তা রক্ষায় করণীয় - গৃহের সকল কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন, নিরাপদে চলাফেরা, আরাম ও
বিশ্রামের জন্য গৃহ পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, পরিপাটি থাকা প্রয়োজন। গৃহে এরকম পরিবেশ বজায় রাখলে
গৃহ নিরাপদ আশ্রয় স্থলে পরিণত হয়। গৃহ পরিবেশ যদি নিরাপদ না থাকে তবে নানা ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার
সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় -
আসবাবপত্র যথাস্থানে রাখা, যাতে ঘরের মধ্যে চলাফেরায় কোনো অসুবিধা না হয়।
কোনো আসবাবপত্র ভেঙে গেলে সেটা সরিয়ে ফেলা বা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেরামত করা।
গৃহে চলাচলের জায়পায়, সিঁড়িতে, রান্নাঘরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা।
• সিঁড়িতে, ছাদের চারপাশে রেলিং এর ব্যবস্থা রাখা।
• বাথরুম, রান্নাঘর, কলপাড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, মেঝে যাতে পিচ্ছিল না থাকে সে জন্য ঝাড়ু বা
ব্রাশ দিয়ে ঘষে শ্যাওলা বা পিচ্ছিল পদার্থ দূর করা।
মেঝেতে কাচের টুকরা, পিন, সুচ ইত্যাদি পড়লে সাথে সাথে তা তুলে ফেলা।
ঘরের মেঝেতে পানি পড়লে সাথে সাথে মুছে ফেলা।
• ছুড়ি, কাঁচি, বটি, দা, নেইল কাটার, নিড়ানী, কোদাল ইত্যাদি সরঞ্জাম কাজ শেষে যথাস্থানে গুছিয়ে
রাখা।
• রান্নাঘরের ময়লা-আবর্জনা ডাস্টবিন বা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা।
• বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেলে, সুইচ ভেঙে গেলে সাথে সাথে তা মেরামত করা।
• বৈদ্যুতিক তার, সুইচ ইত্যাদিতে ছোট শিশুরা যাতে হাত দিতে না পারে সেই ব্যবস্থা করা।
• রান্না শেষে চুলা নিভিয়ে ফেলা।
ঔষধ, কীটনাশক, সার ইত্যাদি ছোট শিশুদের নাগালের বাইরে রাখা।
• নর্দমা বা ড্রেন, ম্যানহোলে ঢাকনা ব্যবহার করা।
পরিবারের সকলের সচেতনতা ও সক্রিয় প্রচেষ্টার মাধ্যমে গৃহ পরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব। গৃহ
পরিবেশের নিরাপত্তা পরিবারে যাচ্ছন্দ্য, শান্তি ও কল্যাণ নিয়ে আসে ।
প্রাথমিক চিকিৎসা – বাড়িতে, স্কুলে বা খেলার মাঠে হঠাৎ কারও কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বা কেউ অসুস্থ হলে
তাকে আরাম দেওয়ার জন্য তোমরা কি কোনো ব্যবস্থা নিতে পার? প্রাথমিক চিকিৎসার সাহায্যে এরকম
অবস্থায় আহত বা অসুস্থ ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে আরাম দেওয়া যায়। তাই প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে
আমাদের ধারণা থাকা দরকার। হঠাৎ করে কোনো দুর্ঘটনা ঘটার সাথে সাথে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার
আগে, আহত ব্যক্তির জীবন রক্ষা বা তাকে সাময়িকভাবে আরাম দেওয়ার জন্য জ্ঞান ও দক্ষতা দ্বারা যে ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হয়, তাই প্রাথমিক চিকিৎসা।
উদ্দেশ্য -
আহত ব্যক্তির জীবন রক্ষা করা, যাতে রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে না যায়; যেমন রক্ত
পড়তে থাকলে তা বন্ধের ব্যবস্থা করা, প্রয়োজনে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা,
নাড়ির গতি দেখা ইত্যাদি।
আহত ব্যক্তির অবস্থার উন্নতি করে সাময়িক আরাম দেওয়া।
প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জামাদি -
গৃহে ছোট ছোট দুর্ঘটনা মোকাবেলা অথবা
অসুস্থ রোগীর সেবায় প্রাথমিক চিকিৎসার
জন্য কিছু সরঞ্জামাদি রাখা খুবই জরুরি।
সরঞ্জামাদির তালিকা গজ, তুলা, ব্যান্ডেজ,
সরু ধারালো ছুরি, কাঁচি, ডেটল/স্যাভলন,
পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট, কার্বলিক অ্যাসিড,
স্পিরিট, ব্যথানাশক ঔষধ ইত্যাদি। প্রাথমিক
চিকিৎসার সরঞ্জামাদি একটি বাক্সে ভরে
নিরাপদ জায়গায় রাখতে হবে, প্রয়োজনের
সময় যাতে সহজেই হাতের কাছে পাওয়া
যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জামাদি যে
বাক্সে রাখা হয় তাকে ফার্স্ট এইড বক্স
বলে।
দুর্ঘটনা ছোট ও বড় যে কোনো ধরনের হতে পারে। প্রথমে আমরা ছোট দুর্ঘটনা সম্পর্কে জানব ।
ছোট দুর্ঘটনা – যে দুর্ঘটনাগুলো ঘটলে মারাত্মক আকার ধারণ করে না, প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সহজেই
সারিয়ে তোলা সম্ভব হয় সেগুলো ছোট দুর্ঘটনা। যেমন-
১। ছোট আঘাত- মাংসপেশিতে চাপ লাগা, নখ কাটতে গিয়ে দেবে যাওয়া, চোখে কিছু পড়া, হাতে গরম
ভাপ লাগা ইত্যাদি ছোট আঘাত হিসাবে ধরা হয়। এই ক্ষেত্রে যা করণীয়-
• মাংসপেশিতে, আঙুলে চাপ লাগলে সেই স্থান নীল হয়ে যায়, তাই চাপ লাগার সাথে সাথে একখণ্ড
বরফ কাপড়ে পেঁচিয়ে ধরতে হবে বা ঠাণ্ডা পানি ঢালতে হবে।
নখের কোণা দেবে গেলে, জীবাণুনাশক ক্রিম বা স্যাভলন দিয়ে মুছে ফেলতে হবে।
চোখে কিছু পড়লে পরিষ্কার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চোখ ধুতে হবে।
রান্নার সময় পরম ভাপ লাগলে বরফ, , ঠাণ্ডা পানি, লবণ পানি, নারকেল তেল বা টুথপেস্ট আক্রান্ত
স্থানে লাগাতে হবে।
২। কেটে যাওয়া- দা, ছুরি, বটি, ব্লেড দিয়ে কাজ করতে গেলে অনেক সময় হাত বা পা কেটে যায়। কেটে
-
গেলে যা করণীয়-
কাটা স্থানে ময়লা থাকলে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে, কাপড় দিয়ে চাপ দিয়ে ধরতে হবে এবং উঁচু
করে রাখতে হবে, যাতে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়।
• জীবাণুনাশক ঔষধ যেমন- স্যাভলন, ডেটল, নেভানল ক্রিম ইত্যাদি লাগিয়ে গজ বা পরিষ্কার কাপড়
দিয়ে বেঁধে রাখতে হবে।
ক্ষত বেশি হলে প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে ।
৩। কীটপতঙ্গের দংশন – বোলতা, মৌমাছি, পিঁপড়া, ভিমরুল ইত্যাদি কামড়ালে বা হুল ফুটালে যা করণীয় -
সুচের আগা আগুনে পুড়িয়ে স্যাভলন দিয়ে মুছে জীবানুমুক্ত করে তুল তুলে আনতে হবে।
• মৌমাছি, পিঁপড়া কামড়ালে পিঁয়াজের রস বা লেবুর রস ঘসে লাগাতে হবে।
প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
৪। কাঁটা ফুটে যাওয়া হাতে-পায়ে কোথাও কাঁটা
ফুটে গেলে অথবা কাঠ বা বাঁশের শাল ঢুকে
গেলে যা করণীয় -
• কাঁটা বা শালের অংশ যদি দেখা যায়
তবে চিমটা দিয়ে তুলে ফেলতে হবে।
যদি না দেখা যায় তবে সুচ আগুনে পুড়িয়ে
জীবাণু মুক্ত করে কাঁটাযুক্ত স্থানের চামড়া
সূচ দিয়ে সরিয়ে শাল বা কাঁটা বের করে
আনতে হবে, এরপর স্থানটি জীবাণুনাশক
দিয়ে মুছে ফেলতে হবে ।
৫। গলায় কিছু আটকে যাওয়া-অনেক সময় মাছের কাঁটা, হাড়ের টুকরা গলায় আটকে যায়। ফলে ঢোক
পিছলে পলায় ব্যথা লাগে, অস্বস্তি বোধ হয়। এই ক্ষেত্রে যা করণীয় -
-
অনেক সময় শুকনা ভাত মুঠা করে না চিবিয়ে গিলে খেলে কাঁটা নেমে যায়।
পাকা কলা খেলেও কাঁটা নেমে যায়।
প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
৬। চোখে কিছু পড়া-ধুলা-বালি, চোখের পাপড়ি চোখের ভিতরে ঢুকে গেলে কোনোক্রমেই চোখে হাত দেওয়া
উচিত নয়। ঘষা লাগলে চোখ জ্বালা করবে। চোখের অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই যা করতে হবে-
চোখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে, এতে আরাম বোধ হবে।
প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
৭। কানে কিছু ঢুকে যাওয়া- কানে পিঁপড়া বা পোকা ঢুকে গেলে খুবই অস্বস্তি লাগে। এই ক্ষেত্রে যা করণীয়-
• কিছু সময় শ্বাস বন্ধ করে রাখলে পিঁপড়া বা পোকা বেরিয়ে আসবে।
প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বড় দুর্ঘটনায় মানুষ মারাত্মকভাবে আহত হয়, মৃত্যুঝুঁকি থাকে। এইসব দুর্ঘটনায় প্রাথমিক চিকিৎসা ক্ষতির হাত
থেকে আহত ব্যক্তিকে রক্ষা করে সাময়িক আরাম দিতে পারে। তাই বড় দুর্ঘটনা সম্পর্কে সকলের ধারণা থাকা
দরকার। বড় দুর্ঘটনাগুলো হচ্ছে- • অজ্ঞান হওয়া, আগুনে পোড়া, সাপে কাটা, হাড় ফাটা ও ভেঙে যাওয়া,
পানিতে ডোবা, তড়িতাহত ইত্যাদি ।
বড় দুর্ঘটনাগুলোতে করণীয় -
১। অজ্ঞান হওয়া - অত্যাধিক গরম, ক্ষুধা,
ভয়, দুর্বলতা, দুঃসংবাদ ইত্যাদি কারণে
মস্তিষ্কে রক্তের সরবরাহ কমে যায়,
ফলে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা
থাকে। কেউ অজ্ঞান হওয়ার সাথে সাথে
যা করতে হবে তা হচ্ছে-
অজ্ঞান হওয়ার সাথে সাথে চিৎ
করে শুইয়ে দিতে হবে এবং
মস্তিষ্কে অধিকতর রক্ত
সরবরাহের জন্য পা উঁচু করে
রাখতে হবে, শ্বাস-প্রশ্বাস ও নাড়ির
স্পন্দন লক্ষ করতে হবে।
-মানুষের ভিড় কমিয়ে মুক্ত বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
-শরীরের কাপড় ঢিলা করে দিতে হবে।
-রোগীর দাঁতেদাঁত যাতে লেগে না যায়, সে জন্য রুমাল ভাজ করে দুই পাটি দাঁতের মাঝে দিতে
হবে।
-চোখে, মুখে পানির ঝাপটা দিতে হবে।
-হাত ও পায়ের তালু ম্যাসেজ করতে হবে।
-জ্ঞান ফিরলে গরম দুধ বা শরবত খাওয়াতে হবে।
-প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
২। আগুনে পোড়া - অনেক সময় পরিধেয় বসের আগুন ধরে যায়। গরম পানি, তেল, গরম দুধ ইত্যাদি
শরীরে পড়ে শরীর ঝলসে যায়। এই ক্ষেত্রে যা করণীয় তা হচ্ছে -
-পরিধেয় বস্ত্রে আগুন লাগলে তা খুলে ফেলতে হবে।
-কাপড় খুলতে না পারলে মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে আগুন নেভাতে হবে।
-ভারী কাঁথা, মোটা চট বা চটের বস্তা দিয়ে জড়িয়ে ধরলে আগুন নিভে যায়।
-ক্ষত স্থানে ঠাণ্ডা পানি বা বরফ দিলে ফোসকা পড়বে না। পোড়া জায়গায় কমপক্ষে ১০-১৫ মিনিট
পানি ঢালতে হবে। ফোসকা পড়ে গেলে কোনোক্রমেই সেটা গলানো যাবে না।
-প্রচুর পানি খেতে হবে এবং চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
৩। সাপে কাটা – আমাদের দেশে গ্রাম অঞ্চলে যেখানে ঝোপ-জঙ্গল থাকে, সেখানে সাপ থাকার সম্ভাবনা
থাকে। এছাড়া বর্ষাকালে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। সে সময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। তবে
রাস্তা ঘাটে বা হাঁটা-চলার পথে সাপ আক্রমণ করতে পারে। সাপে কাটলে প্রথমে লক্ষ করতে হবে
সাপটি বিষধর কিনা। সাপ কামড়ালে যদি দুটি দাঁতের চিহ্ন '' থাকে তবে বুঝতে হবে সাপটি
বিষধর। আর যদি চারটি দাঁতের চিহ্ন - '' থাকে তবে বুঝতে হবে সাপটি বিষধর নয়।
বিষধর সাপ কামড়ালে যা করণীয়-
-সাপে কাটার সাথে সাথে বিষ রক্ত প্রবাহের
মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে, তাই আক্রান্ত
স্থানের উপরে পর পর দুইটি বাঁধন দিতে
হবে।
-ধারালো ব্লেড বা ছুরি আগুনে পুড়িয়ে, ডেটল
বা স্যাভলন দিয়ে মুছে জীবাণুমুক্ত করে নিতে
হবে।
-দংশিত স্থান হাফ ইঞ্চি বা এক সেন্টিমিটার
গভীর করে কেটে চাপ দিয়ে রক্ত বের করে
ফেলতে হবে।
-বাধন কোনোক্রমেই ৩০ মিনিটের বেশি রাখা
যাবে না, কারণ এতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে
বাঁধনের নিচের অংশে পচন ধরতে পারে।
সাপে কাটায় বাঁধন দেয়া
-দংশিত ব্যক্তিকে জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করতে হবে, তাকে গরম দুধ বা চা খাওয়াতে হবে।
-দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
সাপটি যদি বিষধর না হয় তবে আক্রান্ত স্থানটি জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
১। হাড় ফাটা ও ভেঙে যাওয়া পড়ে গিয়ে বা কোনো
১। হাড় ফাটা ও ভেঙে যাওয়া পড়ে গিয়ে বা কোনো
দুর্ঘটনায় শরীরের যে কোনো অংশের হাড় ফেটে বা
ভেঙে যেতে পারে। এতে আহত ব্যক্তি যন্ত্রণায়
ছটফট করে। এই ক্ষেত্রে করণীয় হচ্ছে -
• যে স্থানের হাড় ফেটেছে বা ভেঙে গেছে বলে
মনে হচ্ছে সেই স্থানটি খুব সাবধানে বাঁশের
চটা বা কাঠের তক্তা বা বোর্ডের উপর রেখে
হাল্কাভাবে কাপড় দিয়ে জড়িয়ে চিকিৎসকের
কাছে নিয়ে যেতে হবে।
কোনোক্রমেই হাড় সোজা করার চেষ্টা করা যাবে না।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে ।
২। পানিতে ডোবা – ছোট শিশু, সাঁতার না জানা ব্যক্তি নদী, পুকুর বা ডোবায় পড়ে গেলে ডুবে যায়। কেউ
পানিতে ডুবে গেলে তাকে পানি থেকে তোলার জন্য নিজে কখনো পানিতে নামবে না। যা করতে হবে
তা হচ্ছে -
চিৎকার করে বড়দের সাহায্য চাইতে হবে।
ভেসে থাকা যায় এমন কিছু যেমন-বাঁশ, গাছের ডালপালা, খালি হাড়ি, কলস, তক্তা ইত্যাদি ছুড়ে
মারতে হবে।
বড়দের সাহায্য নিয়ে বড় বাঁশ, গাছের ডাল দিয়ে তাকে কাছে টেনে আনার চেষ্টা করতে হবে।
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পানি থেকে তুলে এনে শ্বাসক্রিয়া ও নাড়ির স্পন্দন লক্ষ করতে হবে।
পানিতে ডুবে গেলে নাক-মুখ দিয়ে পানি ঢুকে শ্বাসনালী ও ফুসফুসে চলে যায় ফলে শ্বাসক্রিয়া বন্ধ
হয়ে যায়।
যদি দেখা যায় নিঃশ্বাস পড়ছে না
তাহলে মাথা নিচু ও কাত করে শুইয়ে
দিতে হবে, মুখের চোয়াল দুই পাশ
থেকে শক্ত করে ধরে মুখ হাঁ করে
শ্বাসনালী খুলে দেওয়ার জন্য দুটি
আঙুলে পরিষ্কার কাপড় পেঁচিয়ে মুখের
ভিতরে ঢুকিয়ে পেট ও বুকে চাপ দিতে
হবে। এতে ভিতরের পানি গলা দিয়ে
বের হয়ে আসবে। অতপর চিত্রের মতো
কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস প্রশ্বাস চালুর চেষ্টা
করতে হবে।
দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কৃত্রিমভাবে শ্বাসক্রিয়া চালানো হচ্ছে
৩। তড়িতাহত - আমরা অনেক সময় অসাবধানতা বা অজ্ঞতার কারণে তড়িতাহত বা বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হই।
তড়িতাহত বা বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হলে কোনোক্রমেই তাকে খালি হাতে স্পর্শ করবে না। স্পর্শ করলে তুমিও
বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হবে। অনেক সময় ঝড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়। ছেঁড়া তারে বিদ্যুৎ প্রবাহ থাকলে সে
ভারের সংস্পর্শে আসলে বিদ্যুৎ সৃষ্ট হতে হয়। কেউ তড়িতাহত হলে তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে বা
গৃহের ডাঙা সুইচে হাত দিলেও বিদ্যুৎ সৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এ ক্ষেত্রে যা করতে হবে তা হচ্ছে -
-তড়িতাহত হওয়ার সাথে সাথে মেইন সুইচ বন্ধ করে দিতে হবে।
-কোনো কারণে সুইচ বন্ধ করতে না
পারলে শুকনা কাঠ বা বাঁশ দিয়ে
তড়িতাহতকে ধাক্কা দিতে হবে।
-হাতে রাবারের দস্তানা, পায়ে রাবারের
স্যান্ডেল পরে তড়িতাহতকে উদ্ধার
করতে হবে।
-শ্বাসক্রিয়া চলছে কিনা তা দেখে মুখে
মুখ লাগিয়ে কৃত্রিমভাবে শ্বাসক্রিয়া
চালাতে হবে।
তড়িতাহতকে রক্ষা
-কাঠের উপর শুইয়ে দিয়ে মালিশ করে রক্ত চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে।
-চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
-কাজ তড়িতাহত হলে কী করতে হবে তা দলগতভাবে অভিনয় করে দেখাও ।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
১. জীবাণুনাশক দ্রব্য কোনটি?
ক. গজ
গ. স্পিরিট
২. পরিবারের উদ্দেশ্যই হলো সদস্যদের-
1. চাহিদা পূরণ
ii. লক্ষ্য অর্জন
iii. নিরাপত্তাদান
নিচের কোনটি সঠিক
ক. i ও ii
গ. ii ও iii
খ. স্টিকিং
ঘ. ব্যান্ডেজ
খ. I ও iii
ঘ. i, ইইইইই
গার্হস্থ্য বিজ্ঞান
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও
গ্রীষ্মের সকালে রানা সুস্থ শরীরে খাওয়া-দাওয়া করে স্কুলে আসে। বিদ্যালয়ে দুই ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ
নেই। ব্যবহারিক ক্লাস করতে করতে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যায় রানা। ক্লাসের অন্য ছাত্ররা এসে ভিড়
জমায়। রানার বন্ধু রনি ছাত্রদের ভিড় করতে মানা করে।
৩. রানার অজ্ঞান হওয়ার কারণ কী?
ক. ক্ষুধা
খ. গরম
গ.
৪. রানার জন্য রনির করনীয়-
চিৎ করে শুইয়ে দেওয়া
II. বাতাসের ব্যবস্থা করা
iii. চোখে-মুখে পানির ঝাপটা দেওয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. ७॥
গ. ii ও iii
সৃজনশীল প্রশ্ন
১. রোকসানা বেগমের গৃহে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রায় এখানে-সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। গত মাসে
রোকসানা বেগমের ছোট ছেলে জাওয়াদ বাথরুমে পিছলে পড়ে হাত ভেঙে ফেলে। এছাড়া একদিন আগে
মেঝেতে পড়ে থাকা ব্লেডের সাহায্যে তার মেয়ে মিতুর পা কেটে যায় এবং রক্তক্ষরণ হয়। মা হাতের
কাছে থাকা জীবাণুনাশক দ্রব্য এবং পরিষ্কার কাপড় দিয়ে বেঁধে রক্তক্ষরণ বন্ধ করেন। পরবর্তীতে মা
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
ক. গৃহের কোন পরিবেশ ক্লান্তি দূর করে?
খ. “গৃহ আমাদের স্বস্তির সম্বল”- বুঝিয়ে লেখ।
গ. মিতুর দুর্ঘটনায় মায়ের গৃহীত ব্যবস্থাটি কী নামে পরিচিত? তা ব্যাখ্যা কর।
রোকসানার গৃহ পরিবেশ নিরাপদ কী? বিশ্লেষণ কর।
লাইট অন করতে গিয়ে রুমা তড়িতাহত হলে তার ছোট বোন দেখে চিৎকার করতে থাকে। মা এসে তাড়াতাড়ি যথাযথ ব্যবস্থা নিলেন ।
স্বাভাবিক জীবনযাপনের মধ্যে কখনো কখনো আমরা নানারকম রোগে আক্রান্ত হই। বেশিরভাগ রোগে আমরা
চিকিৎসার পাশাপাশি গৃহে যথাযথ শুশ্রুষার মাধ্যমে আরোগ্য লাভ করি। সাধারণ সর্দি, কাশি, জ্বর থেকে শুরু
করে বিভিন্নরকম সংক্রামক রোগ যেমন- হাম, বসন্ত ইত্যাদি রোগেও আমরা আক্রান্ত হই। পরিবারের যে কোনো
সদস্য রোগাক্রান্ত হলে, তার বিশেষভাবে যত্ন নেওয়া দরকার। অসুস্থ ব্যক্তির শারীরিক দুর্বলতার কারণে
যথাযথ যত্নের দরকার হয়। তাকে আরাম ও বিশ্রাম দেওয়ার জন্য কোলাহলমুক্ত, সাস্থ্যকর পরিবেশে রাখা
দরকার। আর সে কারণেই রোগীর জন্য আলোবাতাস পূর্ণ, যাস্থ্যসম্মত একটা কক্ষের প্রয়োজন হয়। রোগীকে
নির্দিষ্ট কক্ষে রেখে তার উপযুক্ত শুষা করতে পারলে, যে কোনো রোগ থেকেই সে সহজে এবং তাড়াতাড়ি
নিরাময় পেতে পারে।
রোগীর কক্ষের সাজসরঞ্জাম
রোগীর কক্ষটি খোলামেলা ও ছিমছাম হলে যাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত
আসবাব ও সাজসরঞ্জাম রোগীর কক্ষে রাখা উচিত না। শুধুমাত্র রোগীর উপযুক্ত পরিচর্যার জন্য একান্ত
প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নির্দিষ্ট স্থানে গুছিয়ে রাখতে হয়, যাতে সহজেই হাতের কাছে পাওয়া যায়। রোগীর
কক্ষের প্রয়োজনীয় সাজসরঞ্জাম হলো-
-ক্লিনিক্যাল থার্মোমিটার
-ঔষধ মাপার কাপ ও চামচ
-ফিডিং কাপ, গ্লাস, প্লেট, জগ
-বেডপ্যান, ইউরিন্যাল
-গরম ও ঠাণ্ডা পানির ব্যাগ
-সেকেন্ডের কাঁটাযুক্ত ঘড়ি, কলিং বেল, টর্চলাইট
-রুম হিটার ও ওয়াটার হিটার
-প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্স
-বালতি, মগ ইত্যাদি।
রোগীর কক্ষের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
রোগীর কক্ষের ব্যবস্থাপনার মধ্যে প্রথমে কক্ষের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। কক্ষের
আসবাবপত্র, রোগীর পোশাক-পরিচ্ছদ, বিছানা, বালিশ, চাদর সবকিছুই পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখা দরকার ।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকলে সহজে রোগ নিরাময় হয়। অন্যদিকে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ রোগীর জন্য
মোটেও নিরাপদ নয়।
রোগীর ঘর প্রতিদিন ফিনাইল বা ডেটল পানি দিয়ে ভালো করে মুছতে হবে। রোগীর ব্যবহৃত প্লেট, গ্লাস,
বেডপ্যান ইত্যাদি সরঞ্জাম প্রতিদিন সাবান, গরমপানি দিয়ে ধুয়ে নির্দিষ্ট স্থানে গুছিয়ে রাখতে হবে।
কক্ষের দরজা ও জানালায় সাদা বা হালকা রঙের পর্দা ব্যবহার করলে ভালো হয়। পর্দা ব্যবহারে ধুলাবালি ও
কড়া রোদ কক্ষে প্রবেশ করতে পারে না। রোগীর ব্যবহৃত পোশাক-পরিচ্ছদগুলো প্রতিদিন সাবান ও গরম পানিতে
ধুয়ে রোদে শুকাতে হয়। এছাড়া বিছানার চাদর, বালিশের কভার, মশারি, তোয়ালে বা গামছা, রুমাল ইত্যাদি
প্রতিদিন ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। দরজা ও জানালার গ্রিল ডেটল পানি দিয়ে মুছতে হবে। রোগীর ব্যবহারের
লেপ, তোষক, কম্বল, কাঁথা ইত্যাদি জীবাণুমুক্ত করার জন্য মাঝে মাঝে কড়া রোদে দিতে হবে। রোগীর
মলমূত্রাদি যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
রোগীর রক্ষ সংলগ্ন বাথরুম,
টয়লেট প্রতিদিন ফিনাইল, ডিম,
ব্রিচিং পাউডার দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার
ও জীবাণুমুক্ত রাখতে হয়। কক্ষের
মেঝে কাঁচা হলে, সেখানে পানি
পড়লে সাথে সাথে লেপে দিতে
হবে। এ ছাড়াও কয়েকদিন পর পর
পুরা মেঝে লেপে শুকিয়ে নিতে
হবে। ছাদ ও দেয়াল টিন বা বেড়ার
তৈরি হলে, ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে
পরিষ্কার রাখতে হবে।
রোগীর কক্ষে যেন মশা-মাছির উপদ্রব না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। রোগীর কক্ষের পরিবেশ
ভালো হলে, তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠা রোগীর জন্য সহায়ক হয়। সেজন্যই রোগীর কক্ষটা যেমন আরামদায়ক
হতে হবে, তেমনি বিভিন্নরকম দূষণ থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
যে কোনো রোগীর জন্য তার পরিচর্যার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপযুক্ত পরিচর্যার দ্বারা রোগ থেকে সহজেই
মুক্তি পাওয়া যায়। আবার পরিচর্যার অভাবে রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটতে পারে। সেজন্য পরিবারের কেউ
অসুস্থ হলে তার পরিচর্যার ব্যাপারে সচেতন ও যত্নবান হতে হবে। রোগে আক্রান্ত হলে মানুষের শরীর ও মন
দুর্বল হয়ে যায়। অনেক সময় সে নিজের কাজটাও নিজে করতে পারে না। তাই এসময় পরিবারের অন্য
সদস্যদের রোগীর পরিচর্যার দায়িত্ব নিতে হয়। রোগীর প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক হয়ে সহানুভূতির সাথে তার
পরিচর্যা করতে হয়।
রোগীর পরিচর্যার মধ্যে যে বিষয়গুলো পড়ে তা হলো-
-শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয়
-নাড়ির গতি নির্ণয়
-শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি নির্ণয়
শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয়- সুস্থ-স্বাভাবিক অবস্থায় আমাদের দেহের তাপমাত্রা থাকে ৯৮.৪ ডিগ্রি
ফারেনহাইট। কিন্তু জ্বর বা যে কোনো রোগে আক্রান্ত হলে দিনের বিভিন্ন সময়ে এ তাপমাত্রার পরিবর্তন হয়ে
যায়। তাপমাত্রার এই পরিবর্তনের হার বা মাত্রাটা যদি রেকর্ড করে রাখা যায়, তাহলে চিকিৎসকের পক্ষে রোগ
নির্ণয় করে উপযুক্ত ব্যবস্থাপত্র দেওয়া সহজ হয়।
শরীরের তাপমাত্রা মাপার জন্য একটি ক্লিনিক্যাল বা ফারেনহাইট থার্মোমিটার দরকার হয়। থার্মোমিটার একটি
লম্বা ও সরু গোলাকার কাচের নল। থার্মোমিটারের গায়ে ৯৪ ডিগ্রি থেকে ১০৮ ডিগ্রি পর্যন্ত দাগ কাটা থাকে।
থার্মোমিটারের মাঝখানে সরু ছিদ্র থাকে। আর নলের একপাশে ছোট একটা বাল্ব পারদপূর্ণ থাকে। তাপমাত্রা
মাপার জন্য থার্মোমিটারটি বগলের নিচে বা মুখের ভিতরে জিহ্বার নিচে রাখা হয়। দেহের তাপমাত্রার
সংস্পর্শে আসলে পারদ আয়তনে বেড়ে যায় এবং ক্রমশ উপরের দিকে অগ্রসর হয়। যেখানে উঠে পারদ স্থির
হয়ে যায়, সেটাই শরীরের তাপমাত্রা নির্দেশ করে। তাপমাত্রা দেখা হয়ে গেলে তার রেকর্ড রেখে, পারদপূর্ণ
স্থানের বিপরীত দিকে ঝাঁকুনি দিয়ে পারদ যথাস্থানে নামিয়ে আনতে হয়। তাপমাত্রা নির্ণয়ের সময় লক্ষনীয়
বিষয়-
-থার্মোমিটারের পারদ ৯৪ ডিগ্রিতে আনা।
-সাধারণত বগলে বা মুখে থার্মোমিটার স্থাপন করা।
-নির্দিষ্ট স্থানে থার্মোমিটার ২ মিনিট রেখে তাপমাত্রা জানা।
- শুশ্রুষাকারীর মাধ্যমে রোগীর দেহের তাপ নেওয়া।
-তাপ নেওয়ার পর দেহের তাপমাত্রা নৈনিক চার্টে লিখে রাখা।
তাপমাত্রা রেকর্ড রাখার নিয়ম- পাশের ছক
অনুযায়ী কাগজ তৈরি করে নির্দিষ্ট সময়ে
তাপমাত্রা নির্ণয় করে তা লিখে রাখতে
হয়। চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী দিনে
কয়েকবার এ তাপমাত্রা মাপা হয়। এর
সাথে একই সময়ে নাড়ির গতি ও
নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের মাত্রা জেনে লিখে রাখা
হয়।
নাড়ির গতি
আমাদের হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনের তালে তালে রক্তবাহী ধমনিগুলো নিয়মিতভাবে স্ফীত হয়। ধর্মনির এই স্ফীতির
হারকে নাড়ির গতি বলা হয়। সাধারণত হাতের কব্জিতে আঙুল রেখে, স্পষ্টভাবে না ড়র গতি অনুভব করা
যায়। নাড়ির গতি নির্ণয়ের সময় একটি সেকেন্ডের কাঁটাযুক্ত ঘড়ি থাকা আবশ্যক। নাড়ির গতি দেখার সময়
রোগীর হাত সহজ ও স্বাভাবিকভাবে রাখতে হয়। কব্জির যেখানে অবিরাম স্পন্দন হয়, সেই ধমনির উপর
হাতের তিনটি আঙুলের প্রান্তভাগ দিয়ে হালকাভাবে চাপ দিলে ধর্মনির স্পন্দন অনুভব করা যায়।
স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিমিনিটে নাড়ির স্পন্দন হয়ে থাকে-
সদ্যজাত শিশুর ১৩০-১৪০ বার
১ বছর বয়স্ক শিশুর ১১০-১২০ বার
২ বছর বয়স্ক শিশুর ১০০-১১০ বার
৮-১৪ বছরের কিশোর-কিশোরীর ৮০-৯০ বার
প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলার ৬৫-৮০ বার
প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের ৬০-৭২ বার
জ্বার হলে নাড়ির গতি বেড়ে যায়। এছাড়া ব্যায়াম, রক্তক্ষরণ, স্নায়বিক আঘাত কিংবা হূৎপিণ্ডের অসাভাবিকতায়
নাড়ির গতি বেড়ে যায়। প্রতিমিনিটে যতবার ধমনি স্পন্দিত হয়, সেই সংখ্যাই নাড়ির গতির হার নির্দেশ করে।
নাড়ির গতির হার খুব মনোযোগ দিয়ে গণনা করে, তার তালিকা করে রাখতে হয়। চিকিৎসকের নির্দেশ
অনুযায়ী দিনে কয়েকবার নাড়ির গতির হার রেকর্ড করা হয়।
শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি – শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি নির্ণয় করতে হলেও সেকেন্ডের কাঁটাযুক্ত ঘড়ি দরকার। শ্বাসক্রিয়ার
গতি জানতে হলে রোগীকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বুক বা পেটের উঠানামার জায়গায় একটি হাত রেখে
রোগীকে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে বলতে হবে। বুক বা পেট প্রতি এক মিনিটে কতবার উঠানামা করছে তা
গণনা করে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি নির্ণয় করা হয়। চিকিৎসকের নির্দেশমতো সঠিক সময়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি
নির্ণয় করে, তার রেকর্ড রাখা হয়।
তাপমাত্রা, নাড়ির গতি এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের গতির রেকর্ড বা তালিকা থেকে চিকিৎসক সঠিকভাবে রোগীর
রোগের অবস্থা জানতে পারেন। ফলে উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে তাড়াতাড়ি রোগের উপশম হতে পারে।
রোগীর সুস্থতার জন্য পরিচর্যার পাশাপাশি তার শারীরিক ও মানসিক যত্নের বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে
বিবেচনা করতে হয়। কারণ একজন সুস্থ ব্যক্তি তার প্রয়োজনীয় কাজগুলো, যেমন- গোসল করা, পোশাক
পরা, খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদি নিজেই করতে পারে। কিন্তু অসুস্থ হলে এই কাজগুলোর জন্য শুশ্রুষাকারীর
সাহায্যের দরকার হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক পদ্ধতিতে রোগীর যত্ন নেওয়া দরকার। দ্রুত আরোগ্য লাভের
জন্য রোগীর শারীরিক ও মানসিক যত্ন নেওয়ার প্রতি পরিবারের সকল সদস্যের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।
শারীরিক যত্ন
রোগীকে আরাম দেওয়ার জন্য তার শারীরিক যত্নের দরকার। অসুস্থতার সময় শারীরিকভাবে দুর্বা থাকার
কারণে রোগীর যত্নের ব্যাপারে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। শারীরিক যত্নের বিভিন্ন দিক নিচে আলোচনা
করা হলো-
পথ্য নির্বাচন ও পরিবেশন
অসুস্থ অবস্থায় রোগীর বিশেষ চাহিদা অনুসারে তাকে যে খাদ্য দেওয়া হয়, তা পথ্য হিসাবে বিবেচিত। রোগের
প্রকৃতি ও তীব্রতা, রোগীর বয়স ও রুচি, পরিপাক শক্তি ইত্যাদি বিবেচনা করে রোগীর জন্য প্রয়োজনীয়
পুষ্টিসমৃদ্ধ সুষম পথ্যের ব্যবস্থা করতে হবে। সব রোগে একরকম পথ্য দেওয়া যায় না। রোগবিশেষে কোনো
কোনো বিশেষ পুষ্টিউপাদান নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন দেখা দেয়। যেমন- বেশি জ্বরে ভুগলে ক্যালরিবহুল
সহজপাচ্য খাবার বেশি দিতে হবে।
শিশুর কোয়াশিয়রকর রোগে প্রোটিন বেশি খাওয়াতে হয়। আবার কিডনি রোগে প্রোটিনের পরিমাণ কমাতে হয়।
সেরকমই ডায়াবেটিস রোগে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন। উচ্চ রক্তচাপে লবণ ও
হৃদরোগে চর্বিবহুল খাদ্য গ্রহণ ক্ষতিকর। ডায়রিয়া বা তীব্র জ্বরে ডাবের পানি, স্যালাইন, শরবত ইত্যাদি রোগ
নিরাময়ে সহায়তা করে।
রোগীর বয়স অনুযায়ী পথ্য নির্বাচন করতে হয়। শিশু ও বয়স্ক রোগীদের খাবার কম মসলা দিয়ে খুব নরম
করে দিতে হবে, যাতে সহজে হজম করতে পারে। পথ্য নির্বাচনে রোগীর রুচির দিকেও বিশেষ নজর দিতে
হয়। চিকিৎসকের সম্মতি নিয়ে রোগীর পছন্দ অনুযায়ী পথ্য দিলে তার তৃপ্তি বজায় থাকবে। মাঝে মাঝে
খাবারের ধরনে পরিবর্তন আনলেও রোগীর খাবারের প্রতি আগ্রহ বাড়ে। সেজন্য খাদ্যে বৈচিত্র্য এনে খাবারের
একঘেয়েমি দূর করা যায়, এতে রোগীর রুচিও বাড়ে। রোগীর পথ্য পরিবেশনেও যত্নবান হতে হবে। তাকে
সবসময় সহজপাচ্য, টাটকা খাবার দিতে হবে। পথ্য যেন অধিক গরম বা ঠাণ্ডা না হয়, সেদিকে লক্ষ।
রাখতে হবে। তার চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে পথ্য পরিবেশন করতে হবে। একবারে বেশি খাবার না
দিয়ে ভারী খাবারটা দিনের বিভিন্ন সময়ে ভাগ করে খাওয়াতে হবে। যেভাবে খেলে রোগী আরাম পাবে,
সেভাবে বসিয়ে বা শুইয়ে তাকে খাওয়াতে হবে। রোগী নিজ হাতে খেতে না পারলে শুশ্রুষাকারী তাকে সাহায্য
করবে। বেশি দুর্বল রোগীকে অনেক সময় ফিডিং কাপ ও চামচের সাহায্যে খাইয়ে দিতে হয়। খাওয়ার পর
ভালোভাবে মুখ ধুয়ে বা রুমাল দিয়ে মুছে দিতে হবে।
ঔষধ সেবন
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে ঔষধ খাওয়াতে হবে। ঔষধের পরিমাণ যেন ঠিক থাকে, সে
বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
রোগীর পোশাক-পরিচ্ছদ
রোগীকে নরম, হালকা রঙের সুতির পোশাক পরানো উচিত। পোশাক যেন ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক হয়, সে
বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। রোগীর পোশাক প্রতিদিন বদলে দিতে হবে এবং গরমপানি, সাবান দিয়ে ধুয়ে
রোদে শুকাতে হবে ।
নিয়মিত দেহের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা :
অসুস্থ ব্যক্তিকে প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠার পর এবং খাওয়ার পর দাঁত, মুখ পরিষ্কার করে দিতে হবে।
রোগীকে প্রতিদিন গোসল করানো সম্ভব না হলে, গা স্পঞ্জ করে বা মুছে দিতে হবে। শোওয়া অবস্থায় মাথা
ধোয়াতে হলে বালিশে রবার ক্লথ এমনভাবে বিছিয়ে নিতে হবে যেন একপ্রান্ত পিঠের তলা পর্যন্ত আসে, অপর
প্রাস্ত খাটের পাশে রাখা বালতিতে পড়বে। মগ বা বদনার সাহায্যে ধীরে ধীরে মাথায় পানি ঢালতে হয়।
এরপর শুকনা গামছা বা তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছে দিতে হয়। নিয়মিত রোগীর নখ কেটে পরিষ্কার রাখতে
হবে। দিনে দুই-তিন বার চুল আঁচড়াতে হবে। মলমূত্র ত্যাগ করার জন্য প্রয়োজনে বেডগ্যান ব্যবহার করতে
হবে। রোগীর ব্যবহারের পানি হালকা গরম হলে আরাম বোধ হবে।
রোগীর মানসিক যত্ন
শারীরিক যত্নের মতো রোগীর মানসিক যত্ন তাকে দ্রুত আরোগ্য লাভে সহায়তা করে। রোগীর মন ভালো
রাখার জন্য সেবা-যত্নের ব্যাপারে বিশেষভাবে সচেতন থাকতে হবে। তার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।
তার প্রতি কখনো বিরক্তি প্রকাশ করা যাবে না। ধৈর্য ও সহানুভূতির সাথে রোগীর সব কষ্ট জেনে, তার
সেবা-শুশ্রুষা করতে হবে। তাকে একা রাখা ঠিক নয়। তার সাথে কথা বলার জন্য পাশে কেউ থাকবে। তার
মন ভালো রাখার জন্য, তার শখ অনুযায়ী বিনোদনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। খোলা জানালা দিয়ে প্রাকৃতিক
দৃশ্য দেখার সুযোগ করে দিলে তার মন প্রফুল্ল থাকবে। তার ঘর নিয়মিত সাজিয়ে রাখলে মনে প্রশান্তি
আসবে। গুরুতর অসুস্থতায়ও তাকে সাহস জোগাতে হবে, যাতে তার মনোবল অটুট থাকে। রোগীর মানসিক
যত্নের ব্যাপারে পরিবারের সবাইকে মনোযোগী হতে হবে।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
১. স্বাভাবিক অবস্থায় কিশোর-কিশোরীর প্রতি মিনিটে নাড়ির স্পন্দন হয়ে থাকে?
ক. ৬০-৭৫ বার
খ. ৬৫-৮০ বার
গ. ৮০-৯০ বার
ঘ. ৯০-১০০ বার
২. অসুস্থ ব্যক্তির শুশ্রূষায় পরিবেশ হতে হবে—
i. কোলাহলপূর্ণ
ii. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন
iii. আলো-বাতাসপূর্ণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
গ. ii ও iii
খ. i ও iii
ঘ.i, iiiii
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর পাও
তনু স্কুল থেকে ফেরার পথে বৈশাখী ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি আসে। বাড়ি এসে ঠাণ্ডা পানি পান করে।
কিছুক্ষণ পর তনু কাশতে শুরু করে এবং তার সর্দি ও জ্বর দেখা দেয়। মা তনুর ছোট ভাই ধ্রুবকে তনুর
ব্যবহৃত রুমাল ধরতে নিষেধ করেন।
৩. ধ্রুবকে তনুর ব্যবহৃত রুমাল ধরতে মানা করার কারণ রোগটি
i.
সংক্রামক
ii. বংশগত
iii. বায়ুবাহিত
গৃহে রোগীর শুশ্রুষা
নিচের কোনটি সঠিক?
iii
ক. i७॥
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
৪. উক্ত রোগীর জন্য করণীয়-
ক. নিত্য ব্যবহার্য জিনিস সপ্তাহে একবার ধোয়া
খ. ব্যবহৃত পোশাক অল্প রোদে শুকানো
গ. দরজা-জানালায় পর্দার ব্যবহার না করা
ঘ. ব্যবহৃত সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত রাখা
সৃজনশীল প্রশ্ন
১. দুই-তিন সপ্তাহ ধরে মুন্না জ্বরে ভুগছে। জ্বর কখনো থাকে আবার থাকে না। মা ছেলের মাথা ধুয়ে দেন
ও গা স্পঞ্জ করেন। এতেও জ্বর না কমায় মা চিন্তিত হয়ে ছেলেকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। ডাক্তার
সব শুনে মুনার দেহের তাপমাত্রার পরিবর্তনের হার রেকর্ড করতে বলেন এবং পণ্যের ব্যাপারে সচেতন
হতে বলেন। মুন্না তেমন কিছুই খায় না। মা ছেলেকে বিভিন্ন ধরনের ক্যালরি বহুল, সহজপাচ্য ও টাটকা
খাবার তৈরি করে বারবার খেতে দেন।
ক. সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় আমাদের দেহের তাপমাত্রা কত ?
খ. জ্বর মাপার জন্য কী ধরনের থার্মোমিটার প্রয়োজন? বুঝিয়ে লেখ।
গ. ডাক্তার কেন মুন্নার দেহের তাপমাত্রা পরিবর্তনের হার রেকর্ড করতে বলেন- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মায়ের দেয়া পথ্য পরিবেশন মুনার সুস্থতার জন্য যথার্থ কিনা— তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও ।
লাবনী লুবনা দুদিন ধরে তীব্র জ্বরে ভুগছে। জ্বরের কারণে শারীরিক দুর্বলতার পাশাপাশি মানসিকভাবেও সে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
Read more